ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ‘নাপা’ সেবনে দুই শিশুর মৃত্যু: ঔষধ প্রশাসনের প্রতিবেদন জমা মঙ্গলবার
সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে প্যারাসিটামল সিরাপ ‘নাপা’ সেবনে দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের গঠিত তদন্ত কমিটি আগামী মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর থেকে দুটি প্রতিনিধিদল ও বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস থেকে প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়েছিল। একই সঙ্গে তাদের তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসাবে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) যেকোনো সময় তারা প্রতিবেদন জমা দেবেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাপা সিরাপ খেয়ে মৃত্যুর মূল কারণ তখনই হয়তো জানা যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে সারা দেশের জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে ঔষধ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা পাঠিয়েছি। সারা দেশেই নির্দিষ্ট ওই ব্যাচের নাপা সিরাপের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। আশা করছি, ঘটনার মূল কারণ খুব শিগগির বেরিয়ে আসবে।’
দেশে কোনো অবৈধ ও নকল ওষুধের প্রতিষ্ঠান নেই দাবি করে আইয়ুব হোসেন আরও বলেন, ‘দেশে ভেজাল ওষুধ নির্মূলে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। একই সঙ্গে আমাদের সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ প্রশাসনও কাজ করছে। আমরা তথ্য পেলে খোঁজখবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এর আগে গতকাল রোববার (১৩ মার্চ) শিশু মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই শিশুর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. আকিব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি আসলে রহস্যজনক। কী করণে ওষুধটি খাওয়ার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে রিঅ্যাকশন করল, ওষুধটিতে কী-ইবা এমন উপাদান ছিল–এ রহস্য উদ্ঘাটনে কিছুটা সময় লাগবে।
তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে নাপা সিরাপের নমুনা নিয়ে ঢাকায় ফেরে তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. আকিব হোসেনের নেতৃত্বাধীন ঔষধ প্রশাসনের প্রতিনিধিদল।
প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের দুর্গাপুর গ্রামে ইয়াছিন খান (৭) ও মোরসালিন খান (৫) নামে দুই ছেলের জ্বর হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় দোকান থেকে নাপা সিরাপ কিনে তাদের খাওয়ায় পরিবার। এরপর তাদের বমি শুরু হয়। হাসপাতালে তাদের দেখিয়ে বাড়ি আনার পথে দুজনই মারা যায়।
এ ঘটনার পর ওষুধ বিক্রেতাদের ওই নির্দিষ্ট ব্যাচের সিরাপ বিক্রি না করতে অনুরোধ করে বাংলাদেশ কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতি।
আর ঘটনা তদন্তে পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মহিউদ্দিনকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন ও ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. রফিক-উস-ছালেহীন। তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।